বুধবার   ২৬ জুন ২০২৪   আষাঢ় ১৩ ১৪৩১   ১৯ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

তরুণ কণ্ঠ|Torunkantho
৫১

চট্টগ্রাম শহরে  ১০ হাটে পশু বেচাকেনা শুরু

রাশেদুল আজীজ, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ৮ জুন ২০২৪  

জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। দিন দশেক পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। চাঁদ দেখা যাওয়ার পরই কোরবানির নিয়ত করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সেই হিসেবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জিলহজ মাসের প্রথম দশদিন চলে কোরবানির পশু বেচাকেনা। গতকাল শুক্রবার চাঁদ দেখা যাওয়ায়, শনিবার থেকে চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে কোরবানির পশুর হাট।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে ১০টি পশুর হাট বসছে নগরে। এর বাইরে জেলার ১৫টি উপজেলায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে বসবে আরও দুই শতাধিক হাট। তবে উপজেলায় এখনও সবকটি হাটের চুড়ান্ত অনুমোদন হয়নি।


বিবিরহাট, নূর নগর হাউজিং স্টেট বাজারসহ নগরের একাধিক পশুর হাট পরিদর্শন করে দেখা যায় শেষ মুহূর্তে হাটের নানা অস্থায়ী অবকাঠানো তৈরির কাজ চলছে জোরেশোরে। বাঁশের কাঠামো দিয়ে তৈরি চালে দেওয়া হচ্ছে ত্রিপলের ছাউনি। নিরাপত্তার জন্য বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। হাটের ভেতর বৃষ্টিতে কাদা এড়াতে চলাচলের পথে দেওয়া হচ্ছে বালি। ইটও বিছানো হচ্ছে কোথাও কোথাও। বেশ কয়েকজন শ্রমিককে পশুর বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন তৈরি করতেও দেখা গেছে। এরমধ্যেই চট্টগ্রামের আশপাশের জেলা ও উত্তরবঙ্গ থেকে গরুসহ নানা কোরবানির পশু নিয়ে আসতে শুরু করেছেন বিক্রেতারা।

ভিড় জমাতে শুরু করেছেন ক্রেতা ও উৎসুক দর্শনার্থী। এদিন নগরীর নূর নগর হাউজিং এস্টেট বাজারে কুষ্টিয়া থেকে বেশ কয়েকটি গরু নিয়ে আসেন শওকত হোসেন। তিনি বলেন, প্রথম দফায় আমি ১৪টি ষাঁড় এনেছি। খামারে আরও বেশ কিছু গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে সবগুলো নিয়ে আসা হবে। কিছু গরু ঢাকায়ও পাঠানো হবে।বিবিরহাট গরুর বাজারে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা বিক্রেতা বারেক ব্যাপারী বলেন, পরিবহন ও শহরে হাটের খরচ বেশি হওয়াতে আমাদের পশু প্রতি গড়পড়তা হিসেবে দাম বেশি পড়ে।


ক্রেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, কোরবানির পশু ক্রয় কোন প্রকার হিসাব মিলে না,যেটি পছন্দ হয় সেটি কিনে আল্লাহর ওয়াস্তে কোরবানি দেওয়া। প্রতিবছরের ন্যায় ছোট গরুর দাম অনেক বেশি,বড় গরুর দাম তুলনামূলক ভাবে নাগালের মধ্যে।

 


উৎসুখ দর্শনার্থী জানান, আশার কথা এবার কোরবানির পশুর হাটে দেশি গরুর  বিপুল সমাগম চোখে পড়ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এবার সব মিলিয়ে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টি কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে চট্টগ্রামে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৯ হাজার ৬৩৮টি পশুর চাহিদা রয়েছে সন্দীপ  উপজেলায়। সবচেয়ে কম ১৩ হাজার ৬৯৮টি পশুর চাহিদা রয়েছে নগরীর কোতোয়ালী থানা এলাকায়। এবার চট্টগ্রামে কোরবানির ঈদকে ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে সব মিলিয়ে ৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৫১টি পশু। সেই হিসেবে ৩৩ হাজার ৪০৬টি পশুর ঘাটতি রয়েছে এবার।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫১ হাজার ৩৬৬টি পশুর ঘাটতি রয়েছে ডবলমুরিং এলাকায়। আর চাহিদার চেয়ে সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ১৯১টি পশু উদ্বৃত্ত আছে ফটিকছড়ি উপজেলায়।


সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার পশুর ঘাটতি থাকলেও বন্দরনগরীর হাটে আশপাশের জেলা ও উত্তরবঙ্গ থেকে খামারিরা চট্টগ্রামে পশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসায় সেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬৫টি পশুর মধ্যে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ২৭৬টি ষাঁড়, ১ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৫টি বলদ, ৩৭ হাজার ৮৪৪টি গাভী, ৭১ হাজার ৩৬৫টি মহিষ, ১ লাখ ৯৫ হাজার ৭৮৩টি ছাগল, ৫৮ হাজার ৬৯২টি ভেড়া এবং ৪৪টি অন্যান্য পশু রয়েছে।

 


এদিকে, নগরে স্থায়ী-অস্থায়ী হাটের বাইরে অবৈধ হাট প্রতিরোধে মাঠে থাকবেন চসিকের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এই বিষয়ে চসিকসূত্রে জানা যায় , বৈধ হাটের বাইরে এবার কোনো অবৈধ হাট নগরে বসতে পারবে না। অবৈধহাট প্রতিরোধে আমাদের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে থাকবেন। ইজারা দেওয়ার সময় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য আমাদের কিছু শর্ত ছিল, সবগুলো হাটেই সেসব শর্ত নিশ্চিত করা হয়েছে। সব হাটের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

এখন থেকে পুরোদমে কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত  পশু বেচা-কেনা চলবে।

এই বিভাগের আরো খবর